৬৬ হাজার টন কয়লা নিয়ে আজ আসছে আরও একটি জাহাজ
কয়লা সংকটে বন্ধ হওয়া মহেশখালীর মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিটে পুণরায় বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। একমাস পর শনিবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পুণরায় চালু হয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।
গত বুধবার সকালে ইন্দোনেশিয়া থেকে পানামার পতাকাবাহী একটি জাহাজ ৭০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা আসার পর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কয়লা সংকট কেটে উঠলো। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজ রোববার ৬৬ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরো একটি জাহাজ জেটিতে ভিড়বে।
গত ৩১ অক্টোবর থেকে ১২০০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিটের এই বিদ্যুৎকেন্দ্র কয়লা সংকটের কারণে পুরোপুরি উৎপাদন বন্ধ থাকে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মেঘনা গ্রুপের আমদানি করা প্রথম কয়লার চালান এটি। কয়লার জোগান আসায় শনিবার ১২০০ মেগাওয়াটের দুই ইউনিটের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের এক ইউনিটে পুণরায় উৎপাদন শুরু হয়েছে।
আজ রোববার ইন্দোনেশিয়া থেকে আরও ৬৬ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে একটি জাহাজ পৌঁছাবে বলে জানান প্রধান প্রকৌশলী।
কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পরিচালন) মনোয়ার হোসেন মজুমদার জানিয়েছিলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিট কমিশনিংয়ের জন্য জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে কয়লা আনার চুক্তি হয়। জাপানি এই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে গত আগস্টে চুক্তি শেষ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২০০ মেগাওয়াট এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬০০ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট ২০২৩ সালের জুলাইয়ে উৎপাদনে আসে। বাকি ৬০০ মেগাওয়াটের ইউনিটটি গত ডিসেম্বরে চালু হয়। কেন্দ্রগুলো কমিশনিং করার জন্য জাপানের সুমিতমো করপোরেশনের মাধ্যমে ২২ লাখ ৫ হাজার টন কয়লা আমদানি করা হয়েছিল।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, সুমিতমোর সরবরাহ করা কয়লা শেষ হওয়ার আগেই নিয়ম অনুযায়ী কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির দরপত্র আহ্বানের কথা থাকলেও শীর্ষ কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণে কয়লা ক্রয় আটকে যায়।
কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, তিন বছরের কয়লা সরবরাহের জন্য কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ মেঘনা গ্রুপের ইউনিক সিমেন্ট কনসোর্টিয়ামকে সুবিধা দিতে ১০ মাস দেরি করেন। শেষ পর্যন্ত অনিয়মের অভিযোগ তুলে কনসোর্টিয়াম অব বসুন্ধরা, ইকুইন্টিয়া ও অথ্রোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট কয়লা আমদানিতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন গত জুলাইয়ে। ফলে কয়লা আমদানিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। সব প্রক্রিয়া শেষ করে কয়লা আমদানিতে এ মাস পর্যন্ত সময় লেগেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।